পরিবর্তন এসেছে শাহজালাল বিমানবন্দরের যাত্রীসেবায়
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন ট্রলি সংযোজন করা হয়েছে। বর্তমানে ট্রলি সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ টিতে। ক্যানোপি থেকে বের হয়ে ট্রলি নিয়ে বহুতল পার্কিং ও রাস্তার আগ পর্যন্ত যাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
যাত্রীর কাছে ১৫ মিনিট থেকে ৫৫ বা ৬০ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত করা হয়েছে প্রায় ৮৮ শতাংশ। তা-ছাড়া যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে নতুন ১০টি ফ্রি টেলিফোন বুথ স্থাপন ও ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর দ্বার দিয়ে বছরে আন্তর্জাতিক রুটে প্রায় ৫৫ হাজার ফ্লাইট, অভ্যন্তরীণ রুটে প্রায় ৫৩ হাজার ফ্লাইট পরিচালিত হয়। বছরে প্রায় ৯০-৯৫ লাখের বেশি যাত্রী আন্তর্জাতিক রুটে এবং প্রায় ২৩-২৫ লাখ যাত্রী অভ্যন্তরীণ রুটে যাতায়াত করেন। ২০২৩ সালে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেছেন। বর্তমানে ২০২৪ সালে সকল ধরনের ফ্লাইটের চাহিদা অধিক থাকায় এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহায়তা এবং পৃষ্ঠপোষকতায়, মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায়, বেবিচক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সবগুলো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ৪০ টি এয়ারলাইন্স এবং অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সুসমন্বয় করে যাত্রীদের যাত্রা সহজতর করার কাজটি করে যাচ্ছে। পুরোনো অনেক চাহিদা এবং সমস্যার কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে যাত্রীদের তথ্য সেবা প্রদান
বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন এলাকায় যাত্রীদের তথ্য ও দিক নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন করে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত যাত্রীরা বিমানবন্দরে প্রবেশের পরে অনেক সময় সঠিক তথ্য না পাওয়ায় সমস্যায় পড়েন।
এই প্রেক্ষিতে যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে আগমনি এলাকায় ২টি এবং বহির্গমন এলাকায় ৩টি হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে ৫৪ জন সহকর্মী ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে যাত্রীদের বিভিন্ন তথ্য ও দিকনির্দেশনা প্রদান করে যাত্রীসেবা দিয়ে যাচ্ছে।
এক ঘণ্টার মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি
বিগত দিনে বিমানবন্দরে অবতরণ করার পরে যাত্রীদের লাগেজ পেতে বিলম্ব হওয়ার অনেক অভিযোগ ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এসেছে। বর্তমানে এই উক্ত সমস্যাটি সমাধানের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে ১ ঘণ্টা বা তার কম সময়ে যাত্রীদের নিকট লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং লাগেজ ডেলিভারি পেতে সমস্যার সম্মুখীন হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি কর্তৃক তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধান করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তবে বর্তমানে যাত্রীর কাছে ১৫ মিনিট থেকে ৫৫ বা ৬০ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত করা হয়েছে প্রায় ৮৮ শতাংশ। বর্তমানে উক্ত লাগেজ ডেলিভারির সময় আরও কমিয়ে নিয়ে আসার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জিএসএ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে।
ওয়েবপোর্টাল ও ২৪/৭ হটলাইন
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ওয়েবসাইট ও ওয়েব পোর্টাল হয়েছে hsia.gov.bd। এতে করে যাত্রীরা যে কোনো সহায়তা সহজেই পেতে পারেন এবং কোনো অভিযোগ জানিয়ে দ্রুত সমাধান পেতে পারেন।
১৩৬০০ তে ২৪ ঘন্টা হটলাইন কল গ্রহণের মাধ্যমে এই সেবা প্রদান অব্যাহত থাকবে। এছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য HSIA - DIGITAL AIRPORT SERVICE মোবাইল অ্যাপ রয়েছে যাতে যাত্রীরা সহজেই বিমানবন্দরের ভিতরে দিকনির্দেশনামূলক নির্দেশনা পান।
যাত্রীসেবা নিশ্চিতকরণে প্রশিক্ষণ
জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল এবং ICAO Annex 9 (Facilitation) এর Standards and Recommended Practices অনুযায়ী বিমানবন্দরে কর্মরত সকল সংস্থার সদস্যরা যাত্রীদেরকে আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে Passenger Service and Facilitation in Civil Aviation নামে একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই কোর্সের মূল উদ্দেশ্য হলো বিমানবন্দরে কর্মরত সকল সংস্থার সদস্যের যাত্রীসেবা প্রদানে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাসহ দায়িত্ববান হওয়ায় উৎসাহ প্রদান এবং যাত্রীদের সন্তুষ্টি অর্জন করা। এই পর্যন্ত প্রায় ২৮টি ব্যাচে প্রায় ৮০০ জন বিমানবন্দরে কর্মরত সদস্য এই কোর্সটি সম্পন্ন করেছে।
পরিচ্ছন্নতা
নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি ইজারাদার নিয়োগের মাধ্যমে বিমানবন্দরের সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ বিরাজমান রয়েছে। যাতে প্রায় ৪৫০ জন জনবল ৩টি শিফটে, অর্থাৎ প্রতি শিফটে ১৫০ জন করে কাজ করে যাচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।
প্রবাসী ভাই-বোনদের প্রশিক্ষণে অবদান
বিএমইটির মাধ্যমে যেসব প্রবাসী ভাই-বোনেরা দেশের বাইরে যাচ্ছেন, তাদের প্রশিক্ষণ মডিউলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে একটি পাঠ্যের ব্যবস্থা করে সংযোজনের জন্য বলা হয়েছে। এই পাঠ্যে রয়েছে ব্যাগেজ রুলস, ব্যাগেজ গুছানোর নিয়মসহ সার্বিক নিয়মকানুন এবং সচেতনতা বৃদ্ধিকল্পে অন্যান্য জরুরি বিষয়, যাতে প্রবাসীরা উপকৃত হতে পারেন।
গ্রীণ চ্যানেল নম্বর ২ খোলা
যাত্রীদের দ্রুততম কাস্টমস সেবা পৌঁছে দিতে দ্বিতীয় গ্রিন চ্যানেল স্থাপন করা হয়েছে, যা ২৪ ঘণ্টা যাত্রীদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে। ইতিমধ্যে গ্রিন চ্যানেল নম্বর ১ এ, আরেকটি মেশিন সচল করার মাধ্যমে