আহা সেলফি—ভার্চুয়াল ভেল্কি | তানিয়া
যেকোনো নতুন জিনিস উদ্ভাবিত হলে ধীরে ধীরে তার ভালো-মন্দ প্রকট হয়। সেলফি (SELFIE) শব্দটি ২০১৩ সাল নাগাদ অক্সফোর্ড অভিধানে যুক্ত হয়। এই সেলফি বিষয়টির ভাবনা যে খুব নতুন তা কিন্তু নয়। প্রচলিত অর্থে প্রভাব অবশ্যই নতুন। এখন বিপদ, স্টাইল যে অর্থেই হোক এই শব্দের সঙ্গে আমরা অধিক পরিচিত। সবাই বর্তমানে এটাতে এতোই মজেছে যে, শুধু এই শব্দবহুল বাক্য ব্যবহার করে সে এক উদ্ভট গান যা শ্রবণ ইন্দ্রিয়কে বিপর্যস্ত করে তুলেছে— তাও বিখ্যাত হয়ে যাচ্ছে। অসুবিধে হচ্ছে এই ভার্চুয়াল এককটি একা-কে মাহাত্ম্য দিচ্ছে, কিন্ত একার মুহূর্ত খুব বেশীক্ষণের জন্য সফল হতে পারে না।
গ্রিক মাইথোলজির নার্সিসাসের গল্প আমরা সবাই জানি, সবাইকে প্রত্যাখ্যান করে আত্মমুগ্ধ হওয়ার ফল ক্ষয়। সেখানেও বিষয়টি ছিলো ছবি, প্রতিবিম্ব! প্রাচীন যুগের প্রাসঙ্গিকতায় নিজের ছবি দেখতে মানুষ জলই ব্যবহার করত; এর পূর্বে কোনো এক পর্বে কাচ সম্পর্কিত আলোচনায় সে কথা লিখেছিলাম। সেলফি বিষয়টি আপেক্ষিক দৃষ্টিতে কিছুতেই ক্ষতিকারক নয় কিন্তু বিষয় হচ্ছে এর প্রাসঙ্গিকতায় যে ভাব, যে ভাবনা ও ঘোরে আমরা আবদ্ধ হচ্ছি তা আসলেই ক্ষতিকারক। সেই ভোলগা থেকে গঙ্গা শুরু করে আদিম যুগ পেরিয়ে সবকিছুকে একটা গাঠনিক রূপ দিতেই সমাজ; আর তা ব্যাপ্ত করতে সাহিত্য, শিল্প যেনো বন্ধন সুদৃঢ় হয়, একার ক্ষয় না হয়। কিন্তু যে ভাবে, যেদিক দিয়ে, আমরা যার দিকে এগোচ্ছি সেটা শুধু যান্ত্রিক বিষয় নয়। তখন যান্ত্রিক বিষয়কে আর আমি নির্ধারণ করছি না, যান্ত্রিক বিষয় আমায় নির্ধারণ করছে। কে কর্তা আর কে কর্মের বস্তু তাই গোলমাল পাকিয়ে যাচ্ছে, ফলে ব্যক্তি তার যে ব্যক্তিত্বের দ্বারা সমাজে কিছু ভালো করতে পারে সেই ব্যক্তিত্বই অবলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। দেখা গেছে, সমাজে যে সারির মানুষেরা গঠনমূলক ব্যক্তি, তারাও সেইসব ভুলে শুধুমাত্র ভার্চুয়াল মূলকে আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন। আগে দেখা যেত মিডিয়ার এক সারির মানুষ ছবিতে আসেন,